অদ্ভুত আঁধারে মানবতাই শরণার্থী

মাঝ রাত (সেপ্টেম্বর ২০১৮)

নাহিদ জাকী
মোট ভোট ১৫ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.৪
  • ১৯
  • ৩৭
চোখ মেললেই লাল দরিয়ায় ঝড়ের ছোবল।
নির্বাক কান্নার উপচে পড়া লোনা ঢেউ
গোলাপের রক্তের চেয়েও বেশি লাল।
চোখ মেললেই: ধুম্র আঁধারে লণ্ডভণ্ড সিরিয়া।
চোখ মুদলেও: ছোপ ছোপ লাল ফিলিস্তিন!
কোথায় লুকাই জল, জবজবে পাটাতন!
যেদিকে তাকাই, শুধু কাশ্মীর-মায়ানমার-ইরাক;
পাহাড়চূড়ার চেয়ে উঁচা বেদনা নিয়ে দাঁড়িয়ে।
সহস্র প্রাণের রক্ত আর কান্নার রঙ
ঝরে ঝরে পড়ে মহামূল্য রক্তাভ রুবি'র মতো।
অন্ধকার সাইক্লোন ধেয়ে আসে জীবনের পথে,
ডানাভাঙা পাখি হারিয়ে যায় নির্জন আঁধারে।

এবং অতঃপর চোখ মেলে দেখি-
অত্যুজ্জ্বল স্বপ্নের ছটা রংধনুতে।
আমি জড়িয়ে ধরি প্রিয় বন্ধুদের,
চুমু এঁকে দেই শিশুর গালে।
দৃপ্ত শপথে সহযোদ্ধারা উঁচিয়ে ধরি
পতপতে পতাকা: গোলাপের রক্তের চেয়ে লাল
অথবা পাহাড়চূড়ার চেয়েও উঁচা।
এবং আমাদের দ্রোহী হৃদয়ের সংসদে
পাশ হয় আশার সহস্র অনুচ্ছেদ।
আন্দালুসিয়া থেকে বাংলা-ইতিহাসের ধূসর পাতা
ফের গর্জে উঠে বীরত্ব আর মমতার মেলবন্ধনে।
অমিত তেজি তারেক বিন জিয়াদ কাঁপিয়ে দেন শত্রুর ছাউনি।
বাঁশের কেল্লা একাই আগলে ধরেন বীর তিতুমীর।

হামেশা কঁকিয়ে উঠি আমরা,
যখন জেরুজালেমের আকাশে শিশুদের আর্তনাদ।
যখন দেখি সিরিয়ার শিশু নিথর পড়ে আছে দরোজায়।
আমরা স্বপ্নেও দেখি, তাদের কান্নার রক্ত রংধনু হতে
ঝরে ঝরে পড়ে মহামূল্য রক্তাভ রুবি'র মতো।

প্রজন্মের ধ্বংসের স্বাক্ষী ঋজু পাহাড়গুলো।
এখনো বাচ্চারা এতিম হয় কসাই শাসকের হাতে।
নারীর লাশ খুবলে খায় শান্তিবাদী শেয়াল।
আমরা কি করে সুখে ঘুমাই,
যখন রোহিঙ্গা শিশুদের মুখ শোকের বহতা নদী।
ফিলিস্তিনের ডানা-মেলা শিশুরা সব ক্লেশজর্জর বয়োজীর্ণ মানব।
সিরিয়ার অবুঝ শিশু হারায় মা-বাবা, প্রিয়জন।
আর তাদের জন্য ঠাঁয় দাঁড়িয়ে মৃত্যুুর আঁধার।

এসব শিশুরা চেয়েছিলোঃ
একদিন নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াবে আপন উঠোনে।
একদিন শান্তিতে ঘুমাবে জন্মভূমির কোলে।
একদিন হাসবে প্রাণখোলে।
শিশু ত শিশুই থাকতে চায়। আর কিচ্ছু না!
অথচ যুদ্ধের বিভীষিকায় হারিয়ে গেলো কত মুখ।
ক্ষমতা আর লালসার বাঁশিওয়ালারা দলে দলে তাদের নিয়ে গেলো হ্যামিলনের কসাইখানায়।
একটা শিশু কখনো পায় না বুঝি আকাঙ্ক্ষিত স্বদেশ।
কক্ষনো তার বড় হওয়া হয়ে উঠেনা।
স্বাক্ষী হতে পারেনা আরেকটা প্রজন্মের বড় হয়ে উঠার...
একটা প্রজন্মের পুরো অধ্যায় ধ্বংস হয়ে যায়
কিছু পুতিন-আসাদ-ট্রাম্প-সুচির জবাইখানায়।

কিভাবে ভুলি সে মুখগুলো,
যারা মরে গেলো গ্রেনেড আর ড্রোনের তান্ডবে।
একদিন তারাওতো হতে পারতো শিক্ষক, নেতা, মা-বাবা!
হতে পারতো অগ্রনায়ক তারেক বিন জিয়াদ কিংবা বীর তিতুমীর!
প্রজন্মের চিৎকারে কল্লোলিত মাটি আজ বিরানভূমি।
আকাশ এখানে অনেক ছোট, কবর অনেক বড়।
পড়ে আছে শুধু লাল পথ আর লোনা নদী।
গাছের পাতারা লাল, ফলগুলো লাল
ফুলগুলোও সব অপমানিত গোলাপ।
ভাংগা খিলান, জানালার বিচূর্ণ কাঁচ, মরা দেয়াল ধরে
রেখেছে লাঞ্ছিত মানবতার হাহাকার।
কিছু পাথর-হৃদয় পশুর শিকারে
টুটে গেছে ফুলদানি আর নিষ্পাপ খেলনা।
নিদারুণ যন্ত্রণার গীত গাইতে গাইতে পাখিরা
সব মরে গেছে, বিদীর্ণ তাদের ঠোঁট, গলাগুলো কাটা।
তাদের ঘিরে উৎসবে মেতেছে শয়তানেরা।
হাতে হাতে ছুরি আর গ্রেনেডের মালা।
অদ্ভুত আঁধারে অাজ মানবতাই শরণার্থী।





আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Ayan Rakib শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ভাই,,,খুব ভালো লেগেছে,,,!!!
নাহিদ জাকী সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ।
Jamal Uddin Ahmed রক্ত দিয়ে লেখা কবিতা। অভিনন্দন কবি।
কাজী জাহাঙ্গীর অনেক অভিনন্দন ভাই।
Lutful Bari Panna অভিনন্দন ভাই
বিশ্বরঞ্জন দত্তগুপ্ত অনেক অভিনন্দন ।
ধন্যবাদ। আপনাকেও শুভেচ্ছা।
মোঃ মোখলেছুর রহমান অনেক অভিনন্দন জাকী ভাই।
ধন্যবাদ মোখলেছ ভাই। আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা।
তানভীর আহমেদ অনেক অভিনন্দন
ধন্যবাদ তানভীর ভাই। আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

দেশে দেশে মানবতা আজ লাঞ্ছিত, অপমানিত। এ আঁধার থেকে মানুষ মুক্তি পেতে চায়।

২২ আগষ্ট - ২০১৮ গল্প/কবিতা: ৯ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.৪

বিচারক স্কোরঃ ৩.১৫ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ২.২৫ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪